আনোয়ার ও নাহার তাদের ৫ বছরের মেয়ে মৌটুসীকে স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে যায়। স্কুলে ভর্তি করার জন্য ফর্ম পূরণের সময় তারা জানতে পারে অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে জন্ম নিবন্ধন সার্টির্ফিকেট জমা দিতে হবে। আনোয়ার ও নাহার জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে জানতো না, তাই মৌটুসীর জন্ম নিবন্ধন করা হয়নি। আনোয়ার ও নাহার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে এ সম্পর্কে জানতে যায়। প্রধান শিক্ষিকা তাদেরকে জানান জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে জন্মের পর শিশুর জন্ম ও পরিচয় সংক্রান্ত নানা দরকারি তথ্য সরকারি রেজিস্ট্রারে লিখানো। প্রধান শিক্ষিকা তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিসে পরামর্শের জন্য পাঠান। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাদেরকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানায়। তারা জানতে পারে জন্মের পর যেমন শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে হয় তেমনি মৃত্যুর পরও মৃত্যু নিবন্ধন করা জরুরি।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন আমাদের সবার জন্য খুব দরকারি বিষয়। বিশেষ করে সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে হলে এবং সামাজিক নিয়ম শৃঙ্খলা গড়ে তোলার জন্য জন্ম নিবন্ধন খুব প্রয়োজন। ব্যাখ্যা: ১
আনোয়ার : জন্ম মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য কারা নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : বিভিন্ন জায়গায় জন্ম নিবন্ধনের জন্য বিভিন্ন মানুষ রয়েছেন। যেমন :
আনোয়ার : জন্ম মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য কারা নিবন্ধকের কাছে তথ্য পাঠাতে পারেন?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : জন্ম মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিচের ব্যক্তিরা নিবন্ধকের কাছে তথ্য পাঠাতে পারেন-
নাহার : নিবন্ধকের দায়িত্ব কি ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক নিচের দায়িত্ব পালন করবেন। যথা:
আনোয়ার : কিভাবে জন্ম নিবন্ধন করা যায় ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে শিশুর পিতা-মাতা, অভিভাবক বা নির্ধারিত অন্যকোন ব্যক্তি শিশুর জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধককে দিবেন। মনে রাখা দরকার, শিশু নিবন্ধনের আগেই শিশুর নাম ঠিক করতে হবে। শিশুর নাম ঠিক না হলে নিবন্ধনের ৪৫ দিনের মধ্যে নাম ঠিক করে নিবন্ধকের কাছে দিতে হবে।
আনোয়ার : দেরিতে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম কি ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : দেরিতে নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত বিলম্ব ফি দিতে হবে। শিশু যে এলাকায় জন্ম গ্রহণ করেছে সেই এলাকায় তার জন্ম নিবন্ধন করতে হবে।
আনোয়ার : কিভাবে মৃত্যু নিবন্ধন করা যায় ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : কোন ব্যক্তি মারা গেলে মারা যাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ঐ ব্যক্তির স্ত্রী/স্বামী, পুত্র, কন্যা, অভিভাবক বা অন্য কোন ব্যক্তি মারা যাওয়ার খবরটি নিবন্ধককে জানাবেন। এক্ষেত্রেও দেরিতে বিলম্ব নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে।
আনোয়ার : কোন কোন জায়গায় জন্ম সনদের প্রয়োজন হয় ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : কোন ব্যক্তির বয়স, জন্ম, মৃত্যু প্রমাণের ক্ষেত্রে কোন অফিস বা আদালতে বা স্কুল-কলেজে বা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জন্ম বা মৃত্যু সনদ একটা দলিল হিসেবে কাজ করে। অন্য কোন আইনে যাই থাক না কেন নিচের বিষয়ে বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম সনদ ব্যবহার বাধ্যতামূলক-
নাহার : জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন না করলে কি শাস্তি হতে পারে ?
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য : জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন না করলে আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করতে হবে। ব্যাখ্যা:২
এরপর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের সহায়তায় নির্দিষ্ট ফি দিয়ে আনোয়ার ও নাহার তাদের মেয়ে মৌটুসীর জন্ম নিবন্ধন করায়। জন্ম নিবন্ধন ফর্মটি স্কুলে ভর্তির ৪৫ দিনের মধ্যে জমা দিয়ে তারা মৌটুসীকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারে। শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের সব ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র অত্যন্ত জরুরী। তাই প্রত্যেকটি শিশুর জন্মের পর জন্ম নিবন্ধন এবং মৃত্যুর পর মৃত্যু নিবন্ধন করা প্রত্যেকটি নাগরিকের দায়িত্ব।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন.১. জন্ম নিবন্ধনের সুফলগুলো কি কি?
উত্তর.
প্রশ্ন.২. জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কোথায় করতে হবে?
উত্তর. প্রথমত: যে এলাকায় শিশু জন্ম গ্রহণ করবে এবং কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার শেষকৃত্য বা দাফন কার্য সম্পাদন করা হয় সেই এলাকায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করতে হবে।
প্রশ্ন.৩.জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন না করলে তার শাস্তি কি?
উত্তর. জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন না করলে তার শাস্তি ৫০০ টাকা জরিমানা বা দুই মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা উভয়দন্ড।
তথ্যসূত্র
ছবির স্বত্ত্ব
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন : ব্যাখ্যা
সরকার ২০০৪ সালে বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে ও জাতীয় বিভিন্ন প্রয়োজনে জন্ম ও নিবন্ধন আইন করেন এবং দেশের সকল নাগরিকের জন্ম নিবন্ধনের উদ্যোগ নেন। উল্লেখ্য, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ কার্যকর হওয়ার পর ২ বছরের মধ্যে সকল জীবিত ও মৃতব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন করার কথা। |
|
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইনের বিধান বা এর আওতায় প্রণীত বিধি লঙ্ঘনকারী নিবন্ধক বা কোন ব্যক্তি অনধিক ৫০০ টাকা অর্থদন্ড অথবা দুই মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা উভয়দন্ডে দন্ডনীয় হবেন। উল্লেখ্য, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য কোন ক্ষুব্ধ ব্যক্তি অথবা নিবন্ধক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই আইনে মামলা দায়ের করতে পারবেন। |
ছবি
ছবি
সংযুক্তি
সংযুক্তি (একাধিক)
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস